টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম - টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়

টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরী। আমরা অনেকেই টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে কোন ধারণা রাখি না। কিন্তু আমাদের জেনে রাখা উচিত যে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদেরকে অবশ্যই টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম - টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়

টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম

গর্ভবতী মায়েরা টিটেনাস টিকা নিয়ে থাকে যেন বাচ্চারা ধনুষ্টঙ্কার না হয়। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য টিটেনাস টিকা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চার সুরক্ষার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম বিস্তারিত নিচে উল্লেখ করা হলো।

আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার উপায়

আগে কোণ টিকা নেওয়া না থাকে তবে সবগুলোই দিতে হবে। শিশুদের যে পেন্টা ভ্যালেন্ট টিকা দেয়া হয় তাতে ধনুষ্টঙ্কার প্রতিরোধী টিকা থাকে। বর্তমান সময়ে টিকা বাচ্চাদের সুরক্ষা দিতে পারে না যার ফলে বর্তমান সময়ে টিকা দান কর্মসূচির আওতায় আমাদের দেশের সন্তান জন্মদানের সক্ষম নারীদের জন্য ধনুষ্টঙ্কার ও রুবেলার বিরুদ্ধে টিটি ও এমআর টিকা দেয়া হয়।

টিটেনাসের ৫টি টিকার ডোজ সম্পন্ন থাকলে আর গর্ভাবস্থায় এই টিকা নেয়ার প্রয়োজন নেই। আর কেউ যদি কোনো টিকা না নিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ৫ মাসের পর ১ মাসের ব্যবধানে পর পর দুটি টিটি টিকা দিয়ে নিতে হবে। আর যদি পূর্বে দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকে তাহলে প্রতি গর্ভাবস্থায় মাত্র একটি বুষ্টার ডোজ নিতে হবে।

এই টিকার প্রথম ডোজ দিতে হবে একজন কিশোরীর ১৫ বছর বয়সে। পরবর্তী ডোজ দিতে হবে প্রথমটি দেওয়ার ২৮ দিন পরে। দুই নাম্বার টিকা দেওয়ার ৬ মাস পর দিতে হবে। তিন নাম্বার টিকা দেওয়ার এক বছর পর দিতে হবে। ৪ নাম্বার টিকা দেওয়ার এক বছর পর দিতে হবে।

মাকে দেয়া এই টিকা মা ও বাচ্চা উভয়েরই ধনুষ্টংকার রোগের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে। প্রসবকালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতায় অসতর্কতা এবং অপরিষ্কার ছুরি, ব্লেড বা কাঁচি ব্যবহার করলে বাচ্চার নাভী কাটার সময় অথবা নাভীর গোড়ায় নোংরা কিছু লাগিয়ে দিলে নবজাতকের ধনুষ্টংকার রোগ হয়।

টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়

গর্ভবতী মায়ের বাচ্চার জন্য এই টিকা দেওয়া হয়। আমরা অনেকেই টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়? এ বিষয়টি সঠিকভাবে জানি না। যার ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়ের জন্য টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়? এবং টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম জানতে হবে।

টিকা আমাদেরকে ক্ষতিকর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে। গর্ভবতী মহিলা যদি ঠিকানায় তাহলে গর্ভবতী মহিলা এবং তার পেটে থাকা সন্তান উভয় ক্ষতিকারক সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। গর্ভাবস্থায় যদি টিকা নেওয়া যায় তাহলে সন্তান জন্মের কয়েক মাস পরেও তার টিকা শুরু করা আগ পর্যন্ত নিরাপদে থাকবে।

যেহেতু গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়া হয়। এটি সাধারণত মায়ের এবং শিশুর সুরক্ষার জন্য দেওয়া হয়। মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং গর্ভে থাকা সন্তানের গুরুতর অসুখ থেকে রক্ষা করতে এই টিকা প্রদান করা হয়।

টিটি টিকা দেওয়ার সময়

আমরা জানি যে এখন যারা কিশোরী রয়েছে সাধারণত তারা আগামীতে মা হবে। তাই মা হবার আগে তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা খুবই প্রয়োজন। প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের টিটি টিকা দিতে হয় যেন তার বাচ্চা ধনুষ্টংকার রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারে। যদি আগে কোন ঠিকানা নেওয়া থাকে তাহলে সবগুলোই টিকা দিতে হবে। এর জন্য আমাদের অবশ্যই টিটি টিকা দেওয়ার সময় সম্পর্কে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গাজরে কোন ভিটামিন থাকে - গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা জানি টিটি টিকা ৫-ডোজ নিতে হয়। ৫ ডোজের টিটি টিকা দেওয়ার সময়সূচী নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • টিটি ১ঃ ১৫ বছর হলেই দিতে হবে
  • টিটি টিকা ২ঃ ১ নাম্বার দেওয়ার ২৮ দিন পর দিতে হবে।
  • টিটি টিকা ৩ঃ দুই নাম্বার টিকা দেওয়ার ৬ মাস পর দিতে হবে।
  • টিটি টিকা ৪ঃ তিন নাম্বার টিকা দেওয়ার এক বছর পর দিতে হবে।
  • টিটি টিকা ৫ঃ ৪ নাম্বার টিকা দেওয়ার এক বছর পর দিতে হবে।

টিটি টিকার ডোজ কয়টি

একজন নারীর জন্য টিটি টিকার ডোজ কয়টি? এ বিষয়ে জানা অত্যন্ত জরুরী। যেহেতু নারী এবং তার সন্তানের জন্য এর টিকা নেওয়া খুবই জরুরী তাই আমাদেরকে টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম এবং টিটি টিকার ডোজ কয়টি দিতে হবে এ বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।

টিটি টিকা মোট পাঁচটি ডোজ নিতে হবে। এর মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের সময় টিটেনাস প্রতিরোধ করে জীবন রক্ষা করা যায়। এই টিকার প্রথম ডোজ টি দিতে হয় নারীর ১৫ বছর বয়সে। পরবর্তী ডোজ দিতে হবে প্রথমটি দেওয়ার ২৮ দিন পরে। এভাবে টিটি টিকা দেওয়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছি।

টিটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - টিটি টিকার উপকারিতা

একজন মহিলার জন্য টিটি টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য এর গুরুত্ব অনেক বেশি। অবশ্যই গর্ভবতী মায়ের এবং নারীদের টিটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং টিটি টিকার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। টিটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিচে উল্লেখ করা হলো।

১। যাদের বিভিন্ন জিনিসে এলার্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে লালচে হয়ে ফুলে যায়।

২। টিকা দেওয়ার স্থানে অল্প ব্যথা থাকে। ব্যথার সাথে সাথে কিছুটা জ্বালাপোড়া করে।

৩। টিটি টিকা দেওয়ার সময় অনেকের জ্বর চলে আসে। এই জ্বর দুই তিন দিন স্থায়ী থাকে। কিছুদিন পর এই জ্বর এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।

৪। টিকা দেওয়ার পর হাতের পেশিতে ব্যথা হতে পারে তাই হাত দিয়ে মাসাজ অথবা বরফ ঘষতে থাকুন। এছাড়া তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেয়।

আরো পড়ুনঃ ইমিউনিটি কি - ইমিউনিটি কাকে বলে - ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

টিটি টিকার উপকারিতা হল এই টিকা ক্ষতিকর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। গর্ভাবস্থায় টিকা নিলে আপনি এবং আপনার সন্তান উভয়েই ক্ষতিকর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন। গর্ভাবস্থায় টিকা নিলে আপনার সন্তানটি জন্মের কয়েকমাস পরেও তার টিকা শুরু করার আগ পর্যন্ত নিরাপদ থাকে। আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আপনার গর্ভের সন্তানকে গুরুতর অসুখ থেকে রক্ষা করবে।

টিটেনাস টিকার দাম কত?

আমরা অনেকেই টিটেনাস টিকার দাম কত? এ বিষয়ে জানিনা। যেহেতু মহিলাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টিকা। গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের জন্য টিটেনাস টিকা খুবই কার্যকরী। সন্তানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং গর্ভবতী মায়ের রক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। টিটেনাস টিকার দাম কত? এটা জানা যায়নি।

আমাদের শেষ কথাঃ টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম - টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে টিটেনাস টিকার দাম কত? টিটি টিকার উপকারিতা, টিটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ডিডি টিকার ডোজ কয়টি? টিটি টিকা দেওয়ার সময়, টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়? টিটেনাস টিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়টি জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ। ২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url