পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস - পাহাড়পুর কি কি আছে

 পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস জানতে চাইলে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সহিত পড়তে হবে। এই আর্টিকেলটিতে, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস তুলে ধরা হবে। মনোযোগের সহিত প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যদি আপনি আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্র: পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস - পাহাড়পুর কি কি আছে

ভূমিকা 

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইউনেস্কো ঘোষিত একটি ঐতিহাসিক স্থান। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের অন্যতম একটি ঐতিহাসিক স্থান হওয়ায়, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এবং চাকুরীর ভাইভা পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়। তাই পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে রাখা উচিত। 

ব্রিটিশ আমলে আবিষ্কৃত ঐতিহাসিক এই স্থানটি সম্পর্কে পুরো আর্টিকেল জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই মনোযোগের সহিত পুরো আর্টিকেলটি পড়তে হবে। তো আসুন দেখে নেয়া যাক, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস, পাহাড়পুর কি কি আছে এবং পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। 

বাংলাদেশের যে কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো পাহাড়পুর বদ্ধবিহার। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ পাহাড় পুর ভ্রমন করেন পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য।আর এ কারণেই বাংলাদেশের ইতিহাসে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের গুরুত্ব এত বেশি। 

যাইহোক, আশা করি আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগের সহিত পড়েন তাহলে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সম্পর্কে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকবে না পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সম্পর্কিত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন। তো দেরি না করে চলুন দেখে নেয়া যাক, পাহাড়ের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস, নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো পড়তে থাকুন। নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সহিত পড়লে, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 

৭৮১ থেকে ৮২১ শতাব্দীর কোন এক সময় পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করা হয়। বিখ্যাত তিব্বতীয় ইতিহাস গ্রন্থ "পাগ সাম জোন ঝাং" থেকে জানা যায়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ করেছিলেন, রাজা শ্রী ধর্মপাল। যিনি ছিলেন পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা। এরপর থেকে প্রায় ৩০০ বছর পর্যন্ত এই বৌদ্ধবিহারটিতে, বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা হয়ে আসছিল। বুদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার জন্য পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে বহু জায়গা থেকে তীর্থযাত্রীদের আগমন ঘটত। চীন ভিয়েতনাম মায়ানমার সহ বিশ্বের আরো অন্যান্য জায়গা থেকেও তীর্থযাত্রীরা ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহণ করার জন্য পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে আসতো। 
অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার দশম শতাব্দীতে আবার মেরামত করা হয়। এবং বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করা হয়। তবে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ধ্বংসের শুরু হয় সেন রাজাদের শাসনামলে। কেন আসেন রাজারা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের রক্ষণাবেক্ষণ খেয়ে ও প্রয়োজনীয় মনে করত আর সে কারণে তারা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের জন্য টাকা খরচ করতে নারাজ ছিল ফলে তা অবহেলিত থাকে। 

ধারণা করা হয়, ১৩শ শতাব্দীর দিকে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী বাংলার উত্তর অঞ্চল দখল করে নেন। যেহেতু ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী মুসলিম শাসক ছিলেন, তাই তিনি স্বভাবগতভাবেই মূর্তির বিরুদ্ধে ছিলেন। আর যেহেতু তিনি এই মূর্তির বিরুদ্ধে ছিলেন, তাই জনসাধারণকে সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করতেন, কেননা সেখানে অনেক ধরনের মূর্তি ছিল। পর্যায়ক্রমে জনক সমাগম না থাকার কারণে ধীরে ধীরে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বিজন স্থানে পরিণত হয় এবং পরিশেষে পরিত্যক্ত অবস্থায় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। 

এরপর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের আর কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। অবশেষে, ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে, ইংরেজ শাসনামলে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কার করেন।তবে আবিষ্কার করার পরে তিনি খনন কাজ করতে পারেননি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের সামান্য অংশ খনন করার পরেই স্থানীয় রাজা কর্তৃক বাধা প্রাপ্ত হন। 

যাইহোক পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকারের বিশেষ সহায়তায় পুরোপুরি খনন কাজ করা হয়। এবং পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার অর্থাৎ সোমপুর বিহার দৃষ্টিগোচর হয়। ব্রিটিশ শাসন আমলের পরেও আরো বহুবার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার খনন করা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের আংশিক খনন কাজ করা হয়েছে। 

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস, সম্পর্কে আশা করি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। নিচে পাহাড়পুর কি কি আছে এবং পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য, সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তো আসেন দেখে নেয়া যাক, পাহাড়পুর কি কি আছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

পাহাড়পুর কি কি আছে

পাহাড়পুর কি কি আছে, সে সম্পর্কে আর্টিকেলটির এই অংশে আলোচনা করা হবে। আর্টিকেলটির এই অংশ মনোযোগের সহিত পড়লে, পাহাড়পুর কি কি আছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।তো দেরি না করে চলুন দেখে নেয়া যাক, পাহাড়পুর কি কি আছে। পাহাড়পুরে যা যা রয়েছে তার তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। 
  • উন্মুক্ত অঙ্গন: পাহাড়পুর বদ্ধবিহারের একটি উন্মুক্ত অঙ্গন রয়েছে। ধারণ করা হয় এই উন্মুক্ত অঙ্গনে মুক্ত সভার আয়োজন করা হতো। 
  • সত্যপীরের ভিটা: পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের পাশেই পীরের ভিটা নামক একটি স্থান রয়েছে সেখানে দুটি মন্দিরের অবস্থান রয়েছে। তাই আপনি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ভ্রমণে গেলে শর্ত পীরের ভিটা দেখতে পাবেন। এছাড়াও সেখানে অনেকগুলো পোড়ামাটির ফলক রয়েছে।
  • গন্ধেশ্বরী মন্দির: পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের অন্যতম একটি আকর্ষণ হলো গন্ধেশ্বরী মন্দির। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ১২ মিটার পশ্চিমে গন্ধেশ্বরী মন্দিরের অবস্থান। এখানেও কিছু প্রাচীন শিল্পকর্ম রয়েছে।  
  • স্নানাগার ও শৌচাগার: তীর্থযাত্রীদের গোসল করার জন্য এবং শৌচকার্য সম্পাদন করার জন্য, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে একটি স্নানাগার ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছিল। 
  • সন্ধ্যাবতীর ঘাট: পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে সন্ধ্যাবতীর ঘাট নামের একটি স্থান রয়েছে। ধারণা করা হয় সেখানে, রাজা মৈদলনের কন্যা সন্ধ্যাবতি নিয়মিত গোসল করতেন। 
পাহাড়পুর কি কি আছে, আশা করি তা জানতে পেরেছেন। ইতোমধ্যেই উপরে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এবং নিচে পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিম্নরুপ। 

পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য

পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য, এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে আর্টিকেলের এই অংশটি আপনাকে মনোযোগের সহিত পড়তে হবে। কেননা আর্টিকেলটি এই অংশে, পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর তুলে ধরা হবে। তো আসুন দেখে নেয়া যাক, পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য। 
সারা বিশ্বে ইউনেস্কো ঘোষিত মোট ৭৫০টি ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এই ঐতিহাসিক স্থান গুলোর মধ্যে থেকে বাংলাদেশের ৩টি স্থান রয়েছে। ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং সুন্দরবন। ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক স্থানসমূহের মধ্যে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান হলো ৩২২। পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য? আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পেরেছেন। 

উপসংহার

আপনি যদি প্রথম থেকে মনোযোগের সহিত এই আর্টিকেলটি অধ্যায়ন করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। কেননা ইতোমধ্যেই উপরে পাহাড়পুর কি কি আছে এবং পাহাড়পুর কততম বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url