ছোট বাবুদের মজার গল্প নীল বেড়াল

 নীল বেড়াল

পুকুর পাড়ে ডালিম গাছ । সে গাছে টুনটুনির বাসা । কদিন আগে টুনটুনির ডিম থেকে দু'টি ছানা হয়েছে। টুনটুনি তাই খুব খুশি। সে ডালে ডালে নেচে বেড়াই আর গান গায় । তার সুখ আর ধরে না। ক'দিন পরে ছানারা উড়তে শিখবে।


ডালিম গাছের নিচে ধোপার নীলের হাঁড়ি । ধোপা পুকুরে কাপড় ধোয়। তারপর নীলের জলে কাপড় ডুবিয়ে রোদে শুকায়। কদিন ধরে ধোপার বাড়ির দুষ্ট সাদা বেড়ালটা ডালিম গাছের নিচ দিয়ে ঘুরঘুর করছে। মাঝে মাঝে সে উপরের দিকে লোভী চোখে তাকায়। গাছে ওঠার সুযোগ খোঁজে।

আরো পড়ুনঃ ছোট্ট  ছোট্ট শিশুদের মজার গল্প যদু মাস্টার

ধোপা টের পেয়ে একদিন বড়ালটাকে তাড়িয়ে ও দিয়েছে। সেজন্য ধোপা থাকলে বিড়াল আসে না। লেবু গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকে। একদিন টুনটুনি ডালিম গাছে ডালে বসে আছে। বেড়াল তখন গাছের নিচে এসে বলে 'টুনটুনি' কেমন আছো? ভালো আছি, বিড়াল মাসি। বলেই টুনটুনি উরে বাসার মধ্যে ঢুকে পড়ে। সে জানে, বিড়ালটা ভারী দুষ্টু। ওর সঙ্গে বেশি কথা বলা ঠিক নয়।

বেড়ালের খুব রাগ হয়। সে মনে মনে বলে, 'দেখে নেব তোমাকে।'  পরদিন বিড়াল আবার আসে। বলে, তোমার ছানাদের দেখব। এই দেখ, বেগুন এনেছি। খালি হাতে আসিনি। বেড়াল বেগুন দেখায়। টুনটুনি নরম গলায় বলে, 'মাসি, ওরা বড় হলেই তোমার বাড়িতে যাবে। বেড়ালের লোক তবু কমে না। তার অনেক দিনের শখ টুনটুনির বাচ্চাদের মাংস খাবে।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের ছোট ছোট ২০টি ছড়ার মেলা 

দিনে দিনে টুনটুনি ছানারা বড় হয়। তারা এখন ডালে ডালে নেচে বেড়ায় । তবে গান শেখেনি এখনও। মা বলেছে ক'দিন পরেই গান শেখানো শুরু করবে। টুনটুনি ছানা দু'টিকে লোভী বেড়ালের কথা বলে। সাবধান করে, বিড়াল ডাকলে ওরা যেন নিচে না যায়। ছানারা বলে, 'না মা, নিচে যাব না।

আরেকদিন। দুপুরবেলা।  টুনটুনি ছানা দুটি'কে ডেকে বলে, ' সোনামনিরা, তোমরা থাক। আমি তোমাদের জন্য খাবার আনতে যাই। দুষ্টু বেড়াল লেবু গাছের আড়াল থেকে সব দেখে । একটু পরে গুটি গুটি পায়ে গাছের নিচে এসে ডাকে, ছানারা, নিচে এসো। আমি তোমাদের মা'র মাসি। তোমাদের নানি। ভয় নেই। তোমাদের জন্য গরম পিঠা এনেছি। নিচে এসে নিয়ে যাও। মজা করে খাবে। ছানারা বেড়ালের চালাকি বুঝতে পারে। মায়ের নিষেধের কথা তাদের মনে পড়ে যায়। দু'জনে ছড়া কেটে কেটে বলে,

'আজ যাবো না, বেড়াল নানি 

নামতে নিচে মানা।

কালকে গিয়ে খাব তোমার 

গরম পিঠা খানা।

আরো পড়ুনঃ তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা কবিতা সমূহ

বেড়াল দেখল এ তো চালাকি হচ্ছে। রাগ করে সে ডালিম গাছে উঠতে লাগল। বেড়ালকে গাছে উঠতে দেখে ছানা দু'টি ফুড়ুৎ করে উড়ে গেল । ওদের ধরতে বেড়াল লাফ দিল। ডাল ভেঙ্গে পড়ল গিয়ে নিচে রাখা ধোপার নীলের হাঁড়িতে । নীলের হাঁড়িতে ডুবে বেড়ালের গায়ের রং হয়ে গেল নীল। আর হাঁড়ি ও গেল ফেটে।

ধোপার কুকুর ছিল গাছের নিচে শুয়ে। কুকুর দেখল, এটা আবার কী! সারা গায়ে নীল রঙ। মনে করল এটা বুঝি কোন দুষ্ট ভেজা খেঁকশিয়াল । মুরগি খেতে এখানে এসেছে। ধোপার কুকুর দিল তাকে তারা। নীলে ভেজা বেড়াল দিল ছুট। গ্রাম ছেড়ে ঢুকলো গিয়ে দূরের এক বাঁশ বনে।

 এরপর থেকে নীল বেড়ালকে আর কেউ কখনও দেখেনি।

ধন্যবাদ***

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url