আলতাদিঘীর ইতিহাস

 রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেমন মান্দা উপজেলার ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ,  বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, আত্রাই উপজেলার রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি, তেমনি ধামইরহাট উপজেলার আলতা দিঘী ও নওগাঁ জেলার একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান।

চিত্রঃ আলতাদিঘী


নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান । এই উপজেলায় আলতাদিঘী নামের একটি কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল বনভূমি। শালবন এবং বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের পরিপূর্ণ এই বনভূমি। ২৬৪.১২ হেক্টর জমির এ বনভূমি ঠিক মাঝখানে রয়েছে প্রায় ৪৩ একর আয়তনের এক বিশাল দিঘি। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে এটিকে আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে।

দিঘীর আকার ঃ

আলতাদিঘীটি বাংলাদেশ -ভারত সীমান্তবর্তী অংশে অবস্থিত একটি প্রাচীন জলাশয়। বিজেপির আয়তন ৪ ৩ আগস্ট এই জলাশয় দৈর্ঘ্য ১১০০ মিটার এবং প্রস্থে ৫০০ মিটার। পাহাড়ের মত পারগুলি উঁচু এবং দক্ষিণপাড় শাল বনের ঢাকা। প্রাচীন যুগলের মধ্যেও এটিও মনে হয় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সচল দিঘী। উল্লেখ্য বিশাল দিঘী রামসাগরের দীর্ঘ ১৫০ মিটার বেশি হল চওড়ায় ১৫০ লিটার কম। আর রামসাগর ১৭৫০ সালের দিকে খনন করা হয়। কিন্তু আলতাদিঘী হিন্দু বৌদ্ধ যুগের দিঘী।

আরো পড়ুন ঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনা মসজিদের ইতিহাস

ইতিহাস ঃ

স্থানীয় মানুষের মুখে একটা লোক কাহিনী প্রচলিত আছে যে প্রজা সাধারণের পানীয় জলের সংকট নিরসন কল্পে রাজা বিশ্বনাথ রাজ মাতার সন্তোষ্টি কল্পে দিঘীটি খনন করেন। রাজ মাতার শর্ত ছিল যে, তিনি পায়ে হেঁটে যত দূর অবধি যেতে পারবেন সেই পর্যন্ত দিঘীটি খনন করতে হবে। রাজ মাতার শর্ত পূরণের বিষয়ে মন্ত্রীবরের সঙ্গে রাজা পরামর্শ করে আলতা নিয়ে আসেন। অতঃপর একদিন ঘটা করে মন্ত্রীবরের সবাই রাজ মাতাকে অনুসরণ করেন এবং রাজ মাতা হাঁটতে শুরু করেন । কিন্তু রাজ মাতার হাঁটা আর শেষ হয় না তিনি হাঁটতেই থাকেন। তারপর পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে মন্ত্রীবর দিঘীর শেষ প্রান্তে রাজ মাতার র পায়ে আলতা ছিটিয়ে দিয়ে তাকে থামিয়ে দেন এই বলে যে, মা তোমার পা ফেটে রক্ত বেরিয়েছে তুমি আর হাঁটতে পারবে না। সেই স্থানে গিয়ে রাজ মাতা হাঁটা বন্ধ করছিলেন। শুরুর স্থান থেকে সেই অবধি পর্যন্ত রাজা বিশ্বনাথ দিঘী খনন করেছিলেন। সেই থেকে এই দিঘী

 আলতাদিঘী নামে পরিচিত লাভ করেন।

জীব বৈচিত্র ঃ

আলতা দিঘীর জাতীয় উদ্যানে মেছোবাঘ, গন্ধগোকুল, শিয়াল, অজগর ও বানর পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পোকামাকড়সহ নানা প্রজাতির  জীববৈচিত্র রয়েছে। বিশেষত শাল গাছকে আলিঙ্গন করে গড়ে ওঠা উই পোকার ঢিবি গুলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুন্দর লাগে।

আরো পড়ুন ঃ বাগেরহাট ষাট গম্বুজ মসজিদের ইতিহাস

*ধন্যবাদ***

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url