ঈদ-ই- মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ?

 ঈদ শব্দের অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ যা বারবার ফিরে আসে। পরবর্তী মিলাদ শব্দের অর্থ হচ্ছে জন্ম সময় বা আগমন সময়। আর নবী দ্বারা আমাদের নবী (সাঃ) কে বোঝানো হয়েছে। সুতরাং ঈদে -ই- মিলাদুন্নবী এর অর্থ এটাই দারায় যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম বা তার শুভ আগমনে খুশি আনন্দ প্রকাশ করার নামই হচ্ছে ঈদে -ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ)।

ঈদে -ই-মিলাদুন্নবী কত তারিখ ঃ

বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৮শে সেপ্টেম্বর ঈদে-ই- মিলাদুন্নবী উদযাপন করা হবে। এ দিন বাংলাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে হয়েছে। যেহেতু ২৮ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী তার মানে ২৭ সেপ্টেম্বর রোজ বুধবার বাদ মাগরিব থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত ঈদে-ই- মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপিত হয়।

ঈদে মিলাদুন্নবী ইসলাম ধর্মে নবী দিবস অথবা ঈদে মিলাদুন্নবী একটি বিশেষ উৎসব। এটি শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) উৎসর্গ করে পালন করা হয়। যেটি নবী দিবস হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)  কে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বলে মনে করা হয়।

এই দিনে ইসলাম ধর্মালম্বীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া, কোরআন শরীফ পাঠ করা, এবং দোয়া করার অনুষ্ঠান এর আয়োজন করে থাকেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয় এবং অনেক জায়গায় শোভাযাত্রার আয়োজনও করা হয়।

আরো পড়ুন ঃগোসলের ফরজ ও সুন্নত কয়টি কি কি বিস্তারিত 

ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থাৎ নবী দিবসের গুরুত্ব ঃ

নবী দিবসের গুরুত্ব ইসলাম ধর্মালম্বীদের কাছে কতখানি গুরুত্ব তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। ইসলামে নবী মুহাম্মদের জন্মদিন বলে কথা যিনি ইসলাম ধর্মের শেষ নবী, শ্রেষ্ঠ নবী এবং এই ধর্মের প্রবর্তক।

এই দিন উপলক্ষে সম্মেলন এবং রাস্তাঘাট বাড়িঘর গুলি সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো হয় তার সাথে সাথে অনেকেই বাড়িতে মিলাদ রাখেন। গরীব-দুঃখীদের মধ্য খাওয়ার বস্ত্র টাকা-পয়সার বিতরণ করা হয়। অনেকেই পরিবারের মৃত সদস্যদের উদ্দেশ্যে দোয়া করে থাকেন।

তাছাড়া নবীজিকে সম্মান জানাতে তাকে স্মরণ করে রাখার জন্য এই দিনটি খুবই সুন্দর ভাবে পালন করা হয়। অনেকেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েন বা বাড়িতে নামাজ পড়ে থাকেন। দোয়া করে থাকেন নবীজি (সাঃ) জন্য নিজের জন্য এবং পরিবারের আরো অন্যান্য জীবিত এবং মৃত সদস্যের জন্য। খুবই উৎসব ও উদ্দীপণের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় এই দিনটি। যা কিনা সবার মুখে মুখে নবী দিবসে নামে পরিচিত। এই দিনটি উপলক্ষে অনেকেই অনেক ভালো কাজ করার জন্য সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকেন।

আরো পড়ুন ঃঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত

ঈদে-ই-মিলাদুন্নবীর প্রচলন কবে থেকে শুরু হয় ঃ

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা শুরু হয়। আর নতুন এই অনুষ্ঠানটি শুরু করেন তৎকালীন খলিফা আল মুয়িজ্জুলি দীনিল্লাহ। শুধু ঈদে মিলাদুন্নবী নয় তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্মদিন, হযরত আলী (রাঃ), ফাতেমা (রাঃ), হাসান এবং হোসাইন (রাঃ) এর জন্মদিন সহ আরো বহু বেদাত চালু করেন।

প্রাথমিকভাবে তা শুধুমাত্র মিশরে পালন করা হলেও পরবর্তীতে আস্তে আস্তে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদে মিলাদুন্নবী অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। এসব আচার-অনুষ্ঠান মিশর থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার পিছনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার নাম হলো আবু সাঈদ কুকবুরী

আবু সাঈদ কুকবুরী বসবাস করতেন ইরাক অঞ্চলের প্রদেশে এবং তৎকালীন সময়ে তার প্রচুর জনসমর্থন ও ভক্ত থাকায় খুব সহজে তিনি এই আচার অনুষ্ঠানগুলো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝতে পারবেন না যে অধিকাংশ বেদাত ইরাক থেকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবং এটা এমন একটি অঞ্চল যেখানে ইসলামের বিভিন্ন ধরনের ইতিহাস জড়িত রয়েছে। ইরাক ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। ইরাকে যেমন অনেক ভালো কাজ হয়েছে ঠিক তেমনি সেখান থেকে অনেক কুসংস্কৃতি ছড়িয়েছে পড়েছে।

পরবর্তীতে এ সকল আচার অনুষ্ঠান ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় উপমহাদেশে যে সকল মুসলিম শাসক ছিল তাদের অধিকাংশই ছিল সে মোতাবলম্বীরা এই ধরনের বেদাত পালনের খুবই পটু ছিলেন। তাই যখন তারা এ ধরনের আচার অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জানতে পারে তখন তারা এই আচার অনুষ্ঠানগুলো পালন করতে আগ্রহী হয়ে পড়ে। আর এভাবেই তাদের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী সহ আরো বিভিন্ন বেদাত কাজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ঈদে মিলাদুন্নবী ইসলামের কোন বিধান নয় বরং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা বেদাত কাজ আর বেদাত কাজ করলে নিঃসন্দেহে গুনাহ হয়। অবশ্যই আপনাকে এই ধরনের বেদাত কাজ পরিহার করতে হবে এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখতে হবে।

***আমার এই আর্টিকেল লেখাটিতে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর সংশোধনের জন্য কমেন্ট  করে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url