ইমিউনিটি কি - ইমিউনিটি কাকে বলে - ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

ইমিউনিটি কি? অর্থাৎ ইমিউনিটি কাকে বলে? এই বিষয়টি নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেল পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই ইমিউনিটি কি? বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আপনার জন্য ইমিউনিটি কি? বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট ইমিউনিটি কি? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ ইমিউনিটি কি - ইমিউনিটি কাকে বলে - ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

ইমিউনিটি কি - ইমিউনিটি কাকে বলে?

ইমিউনিটি বলতে মানবদেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বলা হয়। এই প্রক্রিয়াটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমরা অনেকেই ইমিউনিটি কাকে বলে? এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। আমাদের শরীর থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হলে ইমিউনিটি কি অর্থাৎ হিউনিটি কাকে বলে এই বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে পরিষ্কারভাবে।

আরো পড়ুনঃ বিনিয়োগের প্রকারভেদ - বিনিয়োগের বৈশিষ্ট্য

মানুষের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, কলা ও কোষ নিয়মতান্ত্রিকভাবে একত্রে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক পরজীবী ও অন্যান্য জীবাণু আক্রমণ থেকে মানুষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করে থাকে তাকে ইমিউনিটি বলা হয়। ইমিউনিটি বলতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বলা হয়। এই প্রক্রিয়াটি মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী।

কোন কোন সময় ইমিউনিটি অধিক মাত্রায় ক্রিয়াশীল হলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয় এবং কোন সময় ইমিউনিটি মানব দেহের জন্য উপকারী। শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান ধ্বংস করতে গিয়ে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো ধ্বংস করে ফেলে। ইউনিটির প্রধান কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে সেগুলো হলঃ

  • অনুজীবদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
  • দেহের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে সনাক্ত করা ও প্রতিস্থাপন করা।
  • পরিত্যক্ত ও নষ্ট কোষ গুলো সনাক্ত করে তাদের ধ্বংস করে দেওয়া।

ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

আমাদের শরীর যখন কোন রোগ জীবাণু কিংবা ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া তারা আক্রান্ত হয় তখন সেগুলো থেকে শরীরকে রক্ষা করার দায়িত্ব হল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি সে তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে থাকে। ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায় রয়েছে। অর্থাৎ কিছু ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায় অবলম্বন করে আপনি খুব সহজে আপনার শরীরের রক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবেন।

১। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য সবথেকে কার্যকরী এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। তেল, চর্বি, বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে এবং শাকসবজির ও ফলমূল বেশি খেতে হবে।

২। চিনির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্ষতিকর উপাদান তাই আমাদেরকে চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। এছাড়া চা বা কফি অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে পরিমাপ অনুযায়ী চা এবং কফি খেতে হবে।

৩। ধূমপান সহজে কোন নেশার দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। ধূমপান মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা কমিয়ে দেয় তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রথমে ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।

৪। প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। যদি শারীরিক পরিশ্রম নাও করা হয় তাহলে শরীরচর্চা করতে হবে। প্রতিদিন আধা ঘন্টা জোরে জোরে হাটতে হবে এবং শরীরের জন্য উপকারী ব্যায়ামগুলো করতে হবে।

৫। নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। ওজন আমাদের সুস্থ থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গজল নিয়ন্ত্রণের রাখার উপর অনেকটাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে থাকে।

৬। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমাদের অনেকের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রেখে সবসময় স্বাভাবিক রক্তচাপ আনার চেষ্টা করতে হবে।

৭। মানসিক দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকা যাবে না। অতিরিক্ত মানুষের চিন্তা মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমিয়ে দেয় যার ফলে প্রায় প্রতিনিয়ত এ ধরনের ব্যাক্তি অসুস্থ থাকে।

৮। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করতে হবে। এর সাথে অবশ্যই নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোন ধরনের রোগ জীবাণু শরীরের প্রবেশ না করে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৯। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। ঘুম আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে ঘুমের চাহিদা এবং ভূমিকে অনেক বেশি।

ইমিউনিটি বাড়ানোর খাবার

সুস্থ থাকতে হলে ইমিউনিটি কি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোকে ইমিউনিটি বাড়ানোর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সুস্থতার জন্য সুষম খাবার খাওয়াটা অনেক জরুরী। অনেকের না বুঝে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে ফেলেন যার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ইমিউনিটি বাড়ানোর খাবার গুলো নিজে উল্লেখ করা হলো।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের খিচুনি হওয়ার ৫ টি লক্ষণ - খিচুনি হওয়ার নয়টি লক্ষণ

১। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপাদান বৃদ্ধি মন থাকে। এর মধ্যে রয়েছে লাল শাক, পুইশাক এ ছাড়া টাটকা শাকসবজি। যেগুলো খাওয়ার হলে আমাদের শরীরের রক্ত ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ যে সকল সবজিতে ভিটামিন এর বেশি থাকে সেগুলো বেশি বেশি খেতে হবে।

২। ঘি জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম বিদ্যমান থাকে। এছাড়া শাকসবজি মাছ, চীনা বাদাম সহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩। আমাদের নিয়মিত খাবার গুলোর মধ্যে রুটি ময়দা আটা এ খাবারগুলোতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ এ ছাড়া আরো অন্যান্য পৌষ্টিক উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী এবং কার্যকরী। এগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৪। সামগ্রিক মাছ, মুরগির মাংস ডিমের কুসুম শস্যজাকে খাবার ইলিশ মাছ এবং মাছের ভেতরের তেল এর মধ্যে সেলিনিয়াম নামু খনিজ লবণ বিদ্যমান থাকে। যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি।

৫। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ডিম, বিভিন্ন ধরনের মাংস, সামুদ্রিক খাদ্য প্রচুর পরিমাণে জিংক উপাদানটি পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং উপকারী। জিংক আমাদের শরীরের বিভিন্ন অ্যাঞ্জাম এর একটি অংশ এবং সব টিস্যুতে এটি আছে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৬। ভিটামিন ই জাতীয় উদ্ভিদগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ই জাতীয় খাবার গুলোকে রাখতে হবে। এতে করে খুব সহজেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ইমিউনিটি বুস্টার

ইমিউনিটি কি? এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা এখন বলতে পারি যে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে ইমিউনিটি বলা হয়। ইমিউনিটি বুস্টার সম্পর্কে আমরা অনেকেই কোন ধরনের ধারণা রাখি না। ইমিউনিটি পোস্টার হল খাদ্য আইটেম, শাকসবজি এবং ফলমূল যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে ব্যবহার করি।

আরো পড়ুনঃ চোখের ব্যথা দূর করার দোয়া - চোখের দোয়া আরবি

বাহ্যিক কারণগুলো দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে একটি প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গঠন করে। ইমিউনিটি বুস্টার এর উপকারিতা হলো তারা আপনাকে সংক্রমণ অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। আপনার শক্তি মাত্রা উন্নত করে এবং আপনার উৎপাদনশীলতা থাকবে সাহায্য করে থাকে। আশা করি ইমিউনিটি বুস্টার সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

আমাদের শেষ কথাঃ ইমিউনিটি কি - ইমিউনিটি কাকে বলে - ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে ইমিউনিটি কি? ইমিউনিটি কাকে বলে? ইমিউনিটি বাড়ানোর উপায়, ইমিউনিটি বাড়ানোর খাবার এবং ইমিউনিটি বুস্টার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। আশা করি ইমিউনিটি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপায় সহ আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url